বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১০

মনোরসায়নঃ এলোমেলো আলাপ-৪

আমি খুব ভালভাবেই খেয়াল করলাম যে আমরা যে বিষয়েই তর্ক-বিতর্ক করিনা কেন সবশেষ ফলাফলে যা হয় তা হল আমরা সবাই আসলে একই গ্রাউন্ডে কথা বলেছি, আমরা কেউ কারও যুক্তিকে অগ্রাহ্য করিনি। কিন্তু তবুও এই বিতর্ক চলতে থাকে।
একজনের কিছু কমেন্টের ভিত্তিতে এই ব্যাপারটা ফোকাস করলাম। আমি আমার নোটেই বলে দিয়েছি যে সব পেশাতেই আত্বমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা যাবে। এখন কেউ কি ইচ্ছা করলেই নিজেকে সব পেশাতে নিয়োজিত করতে পারবে? সেটা তো অসম্ভব। ছোট বেলায় আমি মনে করতাম কেন একই সাথে চিকিৎসক ও ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়না? সকালে মেডিকেলে ক্লাস করলাম আর বিকালে ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্লাস। তাহলেই তো আমি একই সাথে চিকিৎসক ও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গেলাম। যাইহোক এখন সব পেশার গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও একজন কোন পেশা বেছে নিবে সেটা নির্ভর করবে সম্পূর্ণ তার রিয়েলাইজেশানের উপর, তার ক্যাপাবিলিটির উপর। ঠিক এই কথাই আমি ফোকাস করতে চেয়েছি। চিকিৎসা পেশাকে ভাল বলা মানে অন্য পেশাকে অবমাননা করা নয়। একজনের সাথে ফোনে কথা হচ্ছিল, সে কিসে পড়ে এটা জিজ্ঞেস করতেই সে এন্সার দিল সে নন-মেডিকেল স্টুডেন্ট। আরে! পৃথিবীতে কি মেডিকেল ছাড়া আর কোন সাব্জেক্ট নাই? খুব বিরক্ত হয়ে আমি তাকে এই কথা বললাম। আমার এই জবাবে সে স্বস্তি নিয়ে বলল, “ যাক, তাহলে আপনারা মেডিকেল বাদে অন্য সাবজেক্টকেও গুরুত্ব দেন...”
আসলে পেশা টা কোন ফ্যক্টর নয়। আমি নিজের জন্য কোন পেশাকে ভাইটাল মনে করছি, কোন ফ্যাক্টর আমার ক্যারেক্টারিস্টিকের সাথে যাবে সেটা তো একেক জনের কাছে একেক রকম। আমার কাছে মেডিকেল পেশা আমার রিয়েলাইজেশানের উপর ভিত্তি করে বেস্ট মনে হয়েছে। এখন সেটা আমার কেন মনে হল এটা কোন বিতর্কের টপিকস হতে পারেনা।
 তবে খুব জোর গুরুত্ব দিয়ে বলছি ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া মেডিকেল পেশা পুরাই অর্থহীন হয়ে যাবে। অপারেশান থিয়েটারে আমি যতদিন ঢুকেছি ততদিনই আমার মনে হয়েছে ইঞ্জিনিয়াররা যদি এত প্রযুক্তি আবিষ্কার না করত তাহলে মেডিকেল পেশা মনে হয় চিরকাল অন্ধকার যুগেই পড়ে থাকত। এই যে আমি মেডিকেল পেশার গুনাগুন করছি সেটাও করছি প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে, যা কোন ইঞ্জিনিয়ারের অবদান, কোন চিকিৎসকের নয়। তারপরও মেডিকেল পেশাকে আমার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি, ইঞ্জিনিয়ারিং কে নয়। হয়ত আমার ক্যাপাবিলিটি ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাকে সাপোর্ট করবেনা, কিংবা আমার উপলব্ধিতে ইঞ্জিনিয়ারিং টা সেরকম জায়গা করে নিতে পারছেনা। সেটা কেবল আমার জন্য, অন্যের জন্য না।

যাইহোক হাসপাতালে প্রতিদিন আমি যখন সুইপারকে ঝাড়ু দিতে  দেখি, হাসপাতাল পরিস্কার করতে দেখি তাদের দেখে আমি ফিল করি কাজটা অনেক ছোট, কিন্তু এটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা হয়ত ওই সুইপারও জানেনা। নার্সদের যোগ্যতা চিকিৎসকদের তুলনায় কম হলেও তাদের কাজের গুরুত্ব যে চিকিৎসকদের তুলনায় বেশি তা আমি নির্দ্বিধায় স্বীকার করব। একজন রোগীর সবচেয়ে বেশি কন্ট্যাক্টে থাকে নার্স, চিকিৎসক নয়। অর্থাৎ আমি যদি এভাবে হিসাব করতে থাকি তাহলে হয়ত প্রতিটা পেশার কতখানি গুরুত্ব তা বর্ণনা করতে অনেক সময় লেগে যাবে। তারপরও কথা থেকে যায়, শেষ পর্যন্ত আমি নিজের জন্য চিকিৎসা পেশাকেই বেস্ট বলব। এত কিছু বলার পরও কেউ যদি আবার এটা নিয়ে বিতর্ক করতে বসে যায় তাহলে ভাবব, এতক্ষন যা বলেছি তা সবই বৃথা...

চলবে...

মনোরসায়নঃ এলোমেলো আলাপ-৩

কিছু কিছু মানুষের পড়াশুনার স্টাইল এত বিরক্তিকর যে বলার বাইরে। কেন জানিনা এই বিরক্তিকর পরিস্থিতি সবসময় আমার সামনেই ঘটে থাকে। দশম শ্রেণীতে যখন পড়ি তখন মিলি আপুর বাসা অনেক দূরে হওয়াতে আম্মা মিলি আপুকে বললেন আমাদের বাসা থেকে ক্লাস করতে। আপু তখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। খুব ভাল কথা। উনি সন্ধ্যায় পড়তে বসেন। সেটাও ভাল কথা। এরপর শুরু হল উনার পড়া। সেটা কে একচুয়ালি পড়া বলা হয় কিনা জানিনা তবে আমার যে কানের বারোটা বেজে তা উনি কখনই খেয়াল করেননা। গলা ফাটায়, চিৎকার করে উনি পড়ে। বাট আমি কিছু বলতামনা। কারণ উনাকে কিছুটা ভয় পেতাম আর আম্মার কাছেও নালিশ করতামনা। মিলি আপুকে আম্মা আবার চরম আকারে পছন্দ করে। পছন্দের কারণ আর কিছুই না। আপু অসাধারণ ব্রিলিয়্যান্ট। আর জোরে জোরে চিৎকার করে পড়া আম্মার খুব পছন্দ। তার ধারণা এতে করে পড়াশুনা খুব ভাল হয়। অথচ সারাজীবন আমি কোনদিন জোরে জোরে পড়িনি। একদম লো সাউন্ডে পড়ি যেন আমিই কেবল শুনতে পাই। মিলি আপুর এই যন্ত্রণা মোটামুটি আমাকে ছয় মাস সহ্য করতে হয়েছে।
মনে পড়ে প্রথম যখন যশোরে বাসা নেই তখন আমাদের পাশের বাসার এক ছেলে যে ভোর বেলা থেকে তার ঐতিহাসিক পড়া শুরু করে সেটা থামতে থামতে সাত/আট ঘণ্টা লেগে যায়। সেই ছেলের যন্ত্রণাও প্রায় আমাকে এক বছর সহ্য করতে হয়েছে। সবচেয়ে বিরক্তিকর ছিল আম্মা সবসময় আমাকে সেই ছেলের মত ভোর বেলা উঠে জোরে জোরে পড়তে বলতেন, তখন আমি পড়ি ক্লাস ফাইভে।সেই ছেলে পড়ে ক্লাস সেভেনে। আমার তখন মনে হত ভোর থেকে উঠে সাত/আট ঘণ্টা পড়ার মত পড়া আসলে আমার নাই। সো এত কষ্ট করার কোন মানে হয়না। তারপরও প্রায় প্রতিদিনই ওই ছেলের জন্য আমাকে বকা শুনতে হত।
ইন্টার পরীক্ষার সময় আমার এক ফ্রেন্ড তার বাসা রিলেইটেড কিছু সমস্যার জন্য আমাদের বাসায় কিছুদিনের জন্য থেকেছিল। তার পড়াশুনার স্টাইল হচ্ছে সারারাত জেগে জেগে পড়বে। অথচ আমি রাত ১২টার পরে জেগে থাকলেও আর পড়তে পারিনা। যেহেতু আমার ফ্রেন্ড সারারাত ধরে পড়ে তাই আম্মার ধারণা যে আমি কিছুই পড়িনা তার তুলনায়। সেটার জন্যও অনেক বকা শুনতে হয়েছে।
ঢাকায় যখন আসি কোচিং করতে তখন আমার সাথে আরো দুজন ফ্রেন্ড এসেছিল। তারাও আমাদের বাসায় থেকেই কোচিং করত। এরমধ্যে একজন ছিল সে যখন পড়ত, মোটামুটি আশে পাশের ফ্ল্যাটের মানুষ সবাই জেনে যেত যে আমাদের বাসায় পড়াশুনার তুফান বয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে আমি কোন উচ্চবাচ্য করিনি, যদিও আমি চরমভাবে ডিস্টার্ব ফিল করতাম।মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত হয়ে গেলে ওর পাশে বসে থাকতাম। ও জোরে জোরে পড়ত সেটা শুনে শুনে আমি পড়ার চেষ্টা করতাম। এরপর একসময় যখন দেখলাম যে আসলেই ওর পাশে বসে আর যাই হোক পড়াশুনা করা সম্ভব না। তখন ওকে এক রুম ছেড়ে দিলাম। এদিকে মামুনের জন্য এক রুম ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আল্টিমেইটলি অন্য রুমে বাকি দুজন মিলে চুপচাপ পড়তাম। একদিন পাশের ফ্ল্যাটেই বিয়ের আয়োজন হচ্ছে। রাত হতেই জোরে জোরে গান-বাজনা শুরু হয়ে গেল। আমরা সব দরজা-জানালা আটকিয়ে দিয়েও সেই লাউড সাউন্ড কমাতে পারিনি। সেই রাতে পড়াও হয়নি। অথচ সেই রাতেও আমার সেই ফ্রেন্ড গলা ফাটিয়ে জোরে জোরে বোটানি পড়েছে।
এরপর যাইহোক মেডিকেলের এডমিশানের পর একজন খুলনা মেডিকেল এবং অন্যজন আর্মড ফোর্সে চলে গেল। আমি সেদিন খুলনা মেডিকেলের ওই ফ্রেন্ড কে ফোন করে জিজ্ঞেস করছিলাম যে সে এখন কিভাবে পড়ে? আমার একথা শুনে সে কিছুক্ষন হেসে বলল, “আসলে আমি তোমাদের অনেক জ্বালিয়েছি, না? তুমি বিশ্বাস করবানা আমি এখন চুপচাপ পড়ি। কারণ আমার জন্য হলের বাকি কেউ পড়তে পারেনা। এজন্য বাধ্য হয়েই পড়াশুনার স্টাইল চেইঞ্জ করেছি।“ ওর কথা শুনে সেদিন সস্তি পেয়েছিলাম।
এরপর যুথী আর সাথী ওরা দুবোন যখন আমাদের বাসায় কোচিং করতে আসল, তখনও দেখি সেইম কেইস। যুথীও গলা ফাটায় ফাটায় পড়ে। কিছু বলিনি সেই বছর। এরপর যুথী যখন আমার কানের পাশে বসে বসে এনাটমি গলা ফাটায় পড়ে তখন ওকে বলি “ আচ্ছা  হলে সিট কবে পাচ্ছ তুমি?” ও বুঝতে পেরে হাসতে হাসতে  বলে আপু আমাকে তো সবাই হল থেকে বের করে দিবে!! একটা বিরক্তিকর ফেসিয়াল এক্সপ্রেসান দেখিয়ে  আর কিছু বলিনা....

চলবে......

মনোরসায়নঃ এলোমেলো আলাপ-২

প্রথম প্যাথোলজি পরীক্ষা ভাল হল। তিন ঘণ্টা লিখতে লিখতে কিভাবে কেটে গেল টেরই পেলামনা। এরপর কমিউনিটি মেডিসিন পরীক্ষা। প্রিপারেশান ভালই ছিল, কিন্তু পরীক্ষার হলে গিয়ে ঠিক ২ঘণ্টা পর খেয়াল করলাম যে আমি আর লিখতে পারছিনা। কারণ লিখার জন্য যে মুড দরকার তা শেষ। খুব কষ্টের সাথে বাকি একঘণ্টা কাটালাম, এন্সার জানা সত্ত্বেও খুব শর্ট-কাট এন্সার দিয়ে দ্রুত লেখা শেষ করে ফেললাম। এরপর মাইক্রোবায়োলজি পরীক্ষা। সাবজেক্টটা আমার কাছে দারুন লাগে। কোয়েশ্চেন ও খুব ভাল হয়েছে। কিন্তু সেদিনও সেইম কেইস। ২ঘণ্টা পর আমি চুপচাপ বসে ছিলাম কিছুক্ষন। স্যার এসে আমাকে চুপচাপ বসে থাকার কারণ জানতে চাইলেন। আমি বললাম যে মাথা ব্যাথা করছে...স্যার প্যারাসিটামল দিতে চাইলেন আমাকে, আমি বললাম যে স্যার আমি সকালে প্যারাসিটামল খেয়ে এসেছি। যাইহোক স্যারের জন্য শান্তিমত চুপচাপ বসে থাকতেও পারছিনা। কিছুক্ষন পর স্যার আবার এসে বললেন যে আমার পানি লাগবে কিনা, পানি খেলে হয়ত কিছুটা ভাল ফিল করতে পারি। আমি বললাম যে স্যার আমার কাছে পানি আছে। অবশেষে পরীক্ষা দিয়ে বের হলাম, খারাপ হয়নি একেবারে। এরপর আরো দুইটা পরীক্ষা মুড অফ/অনের মধ্যে দিয়ে শেষ করলাম। যেহেতু রিটেন তাই কোন প্রভাব পড়েনি...যদিও ফরেনসিক মেডিসিন পরীক্ষা দেবার সময় একবার মনে হল কোয়েশ্চার পেপার ছিড়ে এক্সাম হল থেকে বের হয়ে যায়। প্রেগনেন্সির বায়োলজিক্যাল টেস্ট ব্যাখ্যা করতে বলেছে। এটা কি কোন প্রশ্ন হল? মেজাজ হঠাৎ করেই খুব খারাপ হয়ে গেল। ঠিক তখনি ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টাল হেড স্যার মাইকে বলছিলেন যে প্রশ্ন দেখে ভয় পাবার কিছু নাই, একটু আনিউজুয়াল প্রশ্ন এসেছে, তাই প্রতিটা প্রশ্নে টাচ করলেই পাশ হয়ে যাবে।
বাসায় এসে ভাবলাম মনটা ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু না হয়নি। বরাবরের মত মামুনের একটা লেইট গুড নিউজ শুনলাম আর সেটা হল ও এইচএসসি তে ঢাকা বোর্ডে ৪৪তম হয়েছে, ট্যালন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে বাট ও কিছুই জানেনা। অথচ এটা একবছর লেইট নিউজ। মেডিকেলে ভর্তির জন্য নটরডেম থেকে সব কাগজ-পত্র তুলতে গিয়ে ও এটা জানল। যাইহোক এই ধরনের ব্যাপার ওর জন্য এখন খুব ইউজুয়াল একটা ব্যাপার হয়ে গিয়েছে।
 আমাকে প্রায় সময়ই  অনেকে জিজ্ঞাসা করে কেন দুইভাই-বোনই চিকিৎসক হতে চাই? একজন না হয় ইঙ্গিনিয়ার হলাম!  সেদিন একজনকে কথাইয় কথায় বলছিলাম যে আমার এক জুনিয়র ভাই আছে, আমার মেডিকেলেই পড়ে। তার বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক, তার ছোট ভাইকে এবার বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি করাবে, তার যে ছোট বোন আছে তাকেও মেডিকেলে পড়াবে। মেডিকেল ব্যাপারটাতে একটা নেশা আছে। সবাই এই নেশা ধরতে পারবেনা। আর এটা ঠিক বলেও বুঝানো যাবেনা। আমার খুব ইচ্ছা আমার যে ছোট ছোট কাজিন আছে তারাও সবাই মেডিকেলেই পড়ুক। আসলে পেশার সাথে নিজেকে মানবতার সেবাই ডিরেক্টলি যেভাবে এই পেশাতে আত্বনিয়োগ করা যাবে অন্য কোন পেশাতে হয়ত আমি সেভাবে চিন্তা করতে পারছিনা। ওই যে রিয়েলাইজেশানের ব্যাপার! একেজনের রিয়েলাইজেশান একেকরকম। আমি জানি মেডিকেল বাদে অন্য বহু পেশায় নিজেকে মানবতার তরে বিলিয়ে দেবার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু আমার রিয়েলাইজেশান আপাতত আমার জন্য চিকিৎসা পেশাকেই বেস্ট মনে করছে। এটা কিন্তু শুধু যে আমার ক্ষেত্রেই এরকম রিয়েলাইজেশান এসেছে তা নয় আমার ভাইয়ের জন্যও, কাজিনের জন্যও। তাই গতবার যখন যুথী মেডিকেলে চান্স পেল তখনও খুব আনন্দ লেগেছিল যেমন এবার মামুন চান্স পাওয়াতে আনন্দ পেলাম। কিন্তু এত আনন্দের মধ্যেও ডিপ্রেশানের কারণ খুজে পেলাম না। হরমোনাল চেইঞ্জ ডিপ্রেসানের সাথে রিলেটেড। ব্রেইনের অনেক নিউরোট্রান্সমিটার, কেমিক্যাল বস্তুও ডিপ্রেসানের জন্য দায়ী। সেরোটনিন, ডোপামিন লেভেল অনেক কমে গেছে মনে হয়। শেষের দিন ফার্মাকোলজি পরীক্ষা ছিল। এন্টি-ডিপ্রেস্যান্ট,এন্টি-সাইকোটিক, এন্টি-এপিলেপ্টিক,এন্টি-পারকিনসনিজম সহ আরো কিছু টপিকসের ড্রাগস যেভাবে পড়েছিলাম সেই ড্রাগসের নামগুলো এখনও মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে...আমার জন্য সত্যি ডিপ্রেসানের ড্রাগস লাগবে কিনা বুঝতেছিনা। তবে আর যাইহোক এই সমস্যার জন্য আমি কখনই টিচারের কাছে যাবনা...কারণ স্যার আমাকে কি বলবেন তা আমি খুব ভাল ভাবেই জানি, কিছুদিন আগেই মেন্টাল ডিসঅর্ডারের ওয়ার্ড করে এসেছি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট থেকে। সো স্যারের কাছে যাবার নেসেসিটি ফিল করছিনা আপাতত...
খুব এলোমেলো, অগোছালো লেখা লিখলাম। সবকিছুর মূলে ছিল নিজের ডিপ্রেশানের একটা এনালাইসিস করা...কিন্তু রিপোর্ট কোনভাবেই আসছেনা.........

চলবে...

মনোরসায়নঃ এলোমেলো আলাপ-১

মহানুভব হওয়া কিংবা মহত্ত দেখানো আসলে এত সোজা না। কারণ নিজের অনেক কিছু স্যক্রিফাইস করে লোক দেখানো মহানুভব হওয়া যায়না। খুব আশ্চর্য বস্তু এই “বিবেক”। যা কিছুই করিনা কেন বিবেক সেই কাজের পোস্টমর্টেম করবেই। বাইরে থেকে বলি নিজে যা করেছি ঠিক করেছি কিন্তু বিবেক ঠিকই রিপোর্ট দিয়ে দেয় যে সবসময় যা করি তা ঠিক না। প্রতিনিয়ত আমরা এই বিবেকের রিপোর্টের সম্মুখিন হচ্ছি। ধর্ম দিয়ে আসলে মনে হয় বিবেকের সচেতনতাকে জাগ্রত করা হয় যেন বিবেকের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী কাজ করতে পারি। তা না হলে কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ তা মোটামুটি সবাই জানা সত্ত্বেও সমাজে এর কোন কন্সিকুয়েন্স আমরা দেখিনা কেন? বিবেকের রিপোর্টকে আমরা ক্রমাগত ইগনোর করে চলেছি বোধহয়। কয়েকদিন ধরে কিছু ব্যাপার খুব তীব্রভাবে ফিল করছি। এবসলিউট বলে আসলে কিছু আছে কিনা! মনে হয় নেই। আমি একটা ঘটনাকে যেভাবে ব্যাখ্যা করব অন্যজন সেটা সেভাবে করবেনা। এটাই স্বাভাবিক। ধর্মীয় কিছু ব্যাপারেও মনে হয় সেরকম কিছু আছে। এবসলিউট বলতে শুধু এই যে আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মহানবী (সাঃ) তার রাসূল। আর জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামকে মনোনিত করা হয়েছে। এখন ইসলামের অনেক কিছুই বিভিন্নভাবে ইন্টারপ্রিটেট করা যায়। সবগুলোই সত্য হতে পারে, নাও পারে। কিন্তু কে জাস্টিফাই করবে কোনটা সত্য? এখানেই মনে হয় বিবেকের মেইন কাজ নিহিত রয়েছে। বিবেক ঘটনাকে নিবে যার যার ক্যারেক্টারিস্টিক,পারসোনালিটি আর রিয়েলাইজেসান অনুপাতে। হযরত আবু বকর (রাঃ), কিংবা উমার (রাঃ) কিংবা ওমর (রাঃ) তিনজনের পারসোনালিটি তিনরকম। এবসলিউট ছিল এক জায়গায় যে তারা সবাই মুসলিম, আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা আর মহানবী (সাঃ) কে তারা সবাই জানপ্রাণ দিয়ে ভালবাসত। ঠিক এই জায়গায় এসে যখন চিন্তা করছি তখনই আমার খুব বড় একটা ভুল সংশোধন হল। অনেক ক্ষেত্রেই আমি মনে করি ব্যাপারটা এবসলিউট, সবার একইভাবে ঘটনা ব্যাখ্যা করা উচিত। ইসলামকে মনে হয় আমি এভাবেই অনেক সময় সংকীর্ণ করে ফেলেছিলাম আমার চিন্তা চেতনা দিয়ে। ইসলাম আসলে অনেক অনেক বড় একটা ক্ষেত্র যেটা হয়ত আমার চিন্তার সীমানারও বাইরে। পৃথিবীতে যত মুসলিম রয়েছে সবার চিন্তা ভাবনার গন্ডি সেইম হবেনা। কিন্তু শুধুমাত্র একজায়গায় আমরা সবাই সেইম যে আমরা মুসলিম।এটা পুরাই এবসলিউট। এই সিম্পল ব্যাপারটা আমি বুঝলাম অনেক পরে। তাও সেদিন এক আপু একটা ঘটনা বলতে গিয়ে তার মনোভাবের কথা যখন বলছিলেন তখনই আমি ব্যাপারটা ধরতে পারলাম। সাথে সাথে বাসায় এসে আম্মাকে বললাম যে ইসলামের প্রতি ডেডিকেশান কিংবা ইসলামকে প্র্যাক্টিক্যাল লাইফে ধারন করা একেকজনের কাছে একেকরকম। এটা সম্পূর্ণ রিয়েলাইজেশানের উপর ডিপেন্ড করছে। আমি হয়ত মনে করি আমার দিক থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এভাবে হতে পারে, অন্যজনের কাছে তার প্রচেষ্টা অন্যরকম হবে। কিন্তু দুজনই আমরা ইসলামের জন্যই ডেডিকেশানের দিক থেকে চিন্তা করেছি। তাই কিভাবে বলি তার রিয়েলাইজেশান ভুল আর আমারটা সঠিক! সেই নিখুত বিচারের সাধ্য কি আমাদের আছে?
আজকাল প্রায়ই আমি ডিপ্রেশানের মধ্যে থাকি। কোন কারন ছাড়া, পুরাই ইডিওপ্যাথিক। ২৬শে অক্টোবর থেকে সেকেন্ড এসেসমেন্ট শুরু হয়ে গেল। ২৩থেকেই তাই আমি হলে উঠে গেলাম। খুব কন্সেন্ট্রেসানের সাথে স্টাডি করছিলাম। ২৪ তারিখ খুব টেন্সানের মধ্যে ছিলাম মামুনের রেসাল্ট নিয়ে। মেডিক্যাল এডমিশান আজকাল দূর আকাশের চাদ হয়ে গিয়েছে। ইচ্ছা করলেও সবাই চিকিৎসক হতে পারেনা যদিনা সে ধনী পরিবারের কেউ হয়। সো সেই দিক থেকেই চিন্তা হচ্ছিল বেশি। কারণ বেসরকারী মেডিক্যালে পড়ানোর মত আপাতত চিন্তা-ভাবনা আব্বা-আম্মার নাই। একটু হিসাব দেই সরকারী মেডিকেল আর বেসরকারী মেডিকেলের মধ্যে। সরকারি মেডিকেলে ভর্তি হতে লাগে ৫-৬ হাজার টাকা আর বেসরকারি মেডিকেলে লাগে ১০-১২ লাখ টাকা। অর্থাৎ অনুপাতটা অনেকটা আকাশ-পাতাল হয়ে যায়। যাইহোক ২৪ তারিখ রেসাল্ট দিলনা। সারারাত ঘুম ভাল হয়নি। খুব ভালভাবেই একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম মামুনের ক্ষেত্রে সবকিছু লেইট করে হয়। ও যেবার এইটে স্কলারশিপ পেল রেসাল্টের দুইদিন পর ও জানতে পারল যে ও স্কলারশীপ পেয়েছে। এরপর এসএসসিতে গোল্ডেন এ+ পেল সেই রেসাল্টও সে পরে জেনেছে। এরপর এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ পাওয়া সত্ত্বেও সে মেডিকেলে চান্স পেলনা, তারউপর আবার নটরডেমের স্টুডেন্ট। তাই ওর রেসাল্ট আমার থেকে ভাল হওয়া সত্ত্বেও আব্বা-আম্মা ওকে নিয়েই বেশি টেনসান করে। একবছর গ্যাপ দিয়ে সে আবারো মেডিকেলের জন্য চেষ্টা করে গেল। অথচ আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খুব স্মুথলি হয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ। যাইহোক ২৫তারিখে বিকেলে ওর রেসাল্ট পেলাম, সলিমুল্লাহ মেডিকেলে চান্স পেল। মনে হল আমি নিজেই চান্স পেয়েছি, সেরকম আনন্দ ফিল করলাম। এরপর পড়তে বসেছি হঠাৎ মুড অফ হয়ে গেল। মুড অফ এবং অন সেখান থেকেই শুরু...

চলবে... 

একজন জেড, অতঃপর...

জেড নামক এক ব্যক্তি, ইসলামের ব্যাপারে যার সামান্যতম জ্ঞান নেই। তবে তিনি শুনেছেন ইসলাম নাকি সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। না ঠিক ধর্ম নয় পরিপূর্ণ জীবন বিধান! ইসলামের ব্যাপারে তার জানার প্রবল আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও তিনি জানতে পারেননি। কিন্তু তিনি ধরে নিয়েছেন ইসলাম হচ্ছে থিওরিটিক্যালি বেস্ট ধর্ম কিন্তু প্র্যাক্টিক্যালি নয়। আচ্ছা তিনি কেন জানতে পারেননি। তাহলে জেডের সামনে ঘটের যাওয়া কিছু ঘটনা দেখে আসি



১.

জেড পত্রিকার পাতা উল্টাচ্ছে হঠাৎ চোখে আটকে গেল একটি নিউজ। পরকিয়ার অপরাধে গ্রাম্য এক মেয়েকে দোররা মারা হয়েছে। অথচ পুরুষ ছেলেটি বেকসুর খালাস! এই নিউজের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি নিউজ পড়ে জেড রীতিমত শিউরে উঠল। হিল্লা বিয়ে নামক এক অমানবিক প্রসেসের জন্য এক মেয়েকে আত্বহত্যা করতে হল। গ্রাম্য হুজুরদের এসব ইসলামি ফতোয়া পড়ে জেড ক্রমানয়ে অভিভূত হতে লাগল। তবে ইসলামের ব্যাপারে তার আগ্রহ বাড়তেই থাকল...

২.

একদিন জেড অদম্য কিউরিসিটি নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজে গেল। সে দেখতে চায় মসজিদে মুসল্লিরা আসলে কি করে। জেড যেহেতু আরবি জানেনা তাই সে খুতবা বুঝতে পারলনা। খুতবা শেষে সে যখন তার পাশে বসে থাকা মুসল্লিকে খুতবাতে যা বলা হল তার মানে জানতে চাইল তখন সেই মুসল্লি জানাল যে সেও আরবি জানেনা। শুধু সেই মুসল্লি নয় মসজিদের অধিকাংশই খুতবার মানে বুঝতে পারেনি। অথচ কেউ খুতবার মানে জানতে চাইলনা, আজব! খুতবা শুনলে নাকি অনেক নেকী পাওয়া যায় এই ভরসাতেই সবাই শান্ত ছিল। অবশেষে জুমার নামাজ শেষে জেড ভাবল ইসলাম নাকি পরিপূর্ণ জীবন বিধান অথচ জীবনের সাথে রিলেইটেড কোন নির্দেশনাই মসজিদে পেলামনা। তাহলে এটা কিভাবে জীবন বিধান হয়?? সত্যি সেলুকাস!

৩.

একদিন জেড রাস্তায় পাজামা-পাঞ্জাবি পরা এক মুসলিমে দেখতে পেলেন। সুন্দর দাড়িও আছে তার। জেড তার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইলেন। আসলে জেডের জানার খুব ইচ্ছা একজন মুসলমান কেমন হয়! অতঃপর সেই মুসলিমের সাথে অনেক কথা-বার্তা বললেন। কিন্তু যখনই সেই মুসলিম জানতে পারলেন যে জেড মুসলিম না বরং বিধর্মি তখনি সে পিছুটান দিল। জেডের সাথে আর কথা বলতে চাইলনা, এড়িয়ে চললেন, আর বন্ধুত্বতো অনেক দূরের ব্যাপার। জেড কিছুটা মর্মাহত এতে। ইসলামে ব্রাদারহুড বলে কিছু নাই মনে হয়। তা না হলে একজন মুসলিম কিভাবে এত সংকীর্ণমনা হয়?

৪.

জেড টিভি দেখছিল। ইসলামি সংস্কৃতি জানার জন্য সে চ্যানেলের পর চ্যানেলের স্ক্যান করে যাচ্ছে। কিন্তু কোথাও সে সেভাবে পেলনা। আচ্ছা ইসলামের নিজস্ব সংস্কৃতি বলে কি আসলেই কিছু আছে? যদি থাকে তাহলে কেন ইসলামপন্থীরা তাদের আইডিওলোজিকে আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেনা? এরকম ভাবতে ভাবতেই জেড নিউজ শুনছিল হঠাৎ শুনতে পেল জিহাদের নামে কয়েক যুবকের জঙ্গি হবার নিউজ এবং বিদ্ধংসী কর্মকান্ড। সেই যুবকগুলোর হাতে কিছু লিফলেট পাওয়া গেছে যেখানে লেখা ছিল আল্লাহর আইন কায়েম করতেই তারা এরকম জিহাদি কাজে অংশগ্রহন করেছে। জেড দেখে চিন্তা করছে ইসলাম কি স্বৈরাচারী ধর্ম! একদম জোর করে হলেও ইসলাম কায়েম করতে হবে?...এটা কিভাবে জীবনের ধর্ম হতে পারে তাহলে? জেডের বিবেকে বার বার এই প্রশ্ন উত্থিত হল...

৫.

রাস্তার পাশ দিয়ে হাটার সময় জেড মসজিদের গায়ে একটা লেখা দেখেছিল যেটা তার মনে খুব দাগ কেটেছিল। “পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংগ”- আল-হাদীস। ইসলাম তার মনে সেদিন পজিটিভ ভিউ এনেছিল। কিন্তু সে আরেকদিন যখন মসজিদের পাশ দিয়ে হাটছিল তখন মসজিদের পাশেই প্রচুর ময়লা আবর্জনা দেখে সেই মসজিদের ঈমাম কে এব্যাপারে প্রশ্ন করেছিল। কিন্তু সেই ঈমাম জবাবে বলেছিল যে ঝাড়ুদার আসেনি বলে জায়গা অপরিস্কার রয়ে গেছে। জেড সাথে সাথেই জানতে চাইল যে আপনাদের হাদীসে যেখানে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের পার্ট বলা হচ্ছে সেখানে আপনারা কেন নোংরা জায়গা ঝাড়ুদারের অপেক্ষায় পরিস্কার করলেননা। আকস্মিক এই যৌক্তিক প্রশ্নে ঈমাম খুবই মনক্ষুন্ন হলেন। তিনি জেডকে বললেন যে “ঈমানের পার্ট আপনি কিভাবে বুঝবেন, জানেন আমি কুরয়ানের হাফেজ, অমুক-তমুক ডিগ্রি আছে, আপনি আমাকে ঈমানের পার্ট শেখান!” জেড এধরনের ব্যবহার আশা করেনি। সে শুধুমাত্র হাদীসের এপ্লিক্যাশানটা কেন হচ্ছেনা সেটা জানতে চাইল। অথচ এই ঈমাম যার সুন্দর দাড়ি রয়েছে, পাজামা-পাঞ্জাবি পরা তিনি এভাবে রিএক্ট কেন করলেন? জেড শিউর হল আসলে ইসলাম হচ্ছে পোশাক সর্বস্ব ধর্ম ছাড়া কিছুই না... পেয়েছেন? নাহ! জেড ইসলামের উপর চরম বিরক্ত আবার।


উপরের সব ঘটনা একজন জেডের দৃষ্টিতে ইসলামের জেনারেল পিকচার প্রেসেন্ট করা হয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে একজন জেড কিভাবে ইসলাম কে নেবে সেটা খুব সহজেই অনুমেয়। সেদিন আলোচনা হচ্ছিল ইন্ডিয়ান কালচার, ওয়েস্টার্ন কালচার আমাদের যুবসমাজকে কিভাবে অধপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কিভাবে যুবসমাজ প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে? কিভাবে তারা অন্যায়কে সহজেই মেনে নিচ্ছে? কিভাবে তারা কেবল ফেইসবুক, এফএমরেডিও, বলিউড,হলিউড এর জন্য শেষ হয়ে যাচ্ছে? খুব দোষারোপ করছিলাম যারা এভাবে আমাদের যুবসমাজকে অধপতনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খেয়াল করলাম খুব কমই আমরা নিজেদের সমালোচনা করলাম। আমরা কেন আজ প্রযুক্তিকে লিড করতে পারিনি? কেন আজ আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারিনি? কেন আমরা মিডিয়াতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে ইসলামের নামে সকল অপপ্রচারের জবাব দিতে পারিনি? আমাদের প্রতিপক্ষ যেখানে ডান-বাম-উপর-নিচ দিয়ে তাদের সমগ্র মেধা-মনন, ক্রিয়েটিভিটি দিয়ে তাদের দিকে সবাইকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেখানে আমাদের অবস্থান কোথায়? আমাদের অবস্থান তো হওয়া উচিত ছিল সমগ্র ক্ষেত্রে বিস্তৃত যেখানে এক ইসলামের প্রতিপক্ষ কেবল হবে ইসলামই। এরকমই তো দিক নির্দেশনা কুরয়ানে রয়েছে। অথচ আমরা আজো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘরে বসে নিন্দা জানাতেই আত্বতৃপ্তি অনুভব করছি। আমি তো দেখছি ইসলামের আজ বড় প্রয়োজন শক্তিশালি মিডিয়া ও প্রযুক্তি। অনেক তো ঘরে বসে আরবী কুরয়ান পড়ে নেকি অর্জন করলাম এবার মনে হয় সেই কুর‌্যান কেই ছড়িয়ে দেবার জন্য আমাদের মিডিয়া ও প্রযুক্তির দিকে দৃষ্টিপাত করতে হবে। আসলে দৃষ্টিপাত অনেক পূর্বেই করা উচিত ছিল যা আমাদের প্রতিপক্ষরা করে গিয়েছে। এখন না হয় তাদের দেখানো পথেই আমাদের এগোতে হবে, তাদের অনুসরন করতে হবে। তারপরও যদি আমাদের এই বোধদয় না হয় যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ইসলামের অন্যতম প্রতিপক্ষ কোন ব্যক্তি না, দল না বরং মিডিয়া ও প্রযুক্তি। এই মিডিয়া ও প্রযুক্তিকে যতদিন আমাদের আয়ত্বে না আনতে পারব ততদিন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের নিন্দা করে ঘরে বসেই আত্বতৃপ্তি অনুভব ছাড়া গত্যন্তর নাই।