মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১০

স্মৃতির পর্দায় বন্দী করে রাখা কিছু মুহূর্ত…

স্মৃতির পর্দায় বন্দী করে রাখা কিছু মুহূর্ত…

স্টার কাবাবে প্রায় ৯/১০ জনের মত বসে খাচ্ছিলাম। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। হঠাৎ বাইরে লাঠি হাতে জীর্ন-শীর্ণ এক বৃদ্ধ ফকিরকে দেখা গেল। দেখা মাত্রই তিঁনি উঠে গেলেন। নিজ হাতে তাকে পিৎজা খাওয়ালেন, কোক দিলেন। সবচেয়ে নতুন ৫০টাকার একটা নোট দিলেন বেছে বেছে। অবাক হয়ে দেখছিলাম এই দৃশ্যটা। কিন্তু আমার অবাক হবার যে আরো বাকি ছিল সেটি তখনও বুঝতে পারিনি।
স্টার কাবাব থেকে বের হলাম সবাই। তিঁনি চিন্তা করছেন সবাই কিভাবে বাসায় যাবে? অতঃপর সবার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে তাদের যাবার ব্যবস্থা করলেন। এরপর বাকি ছিলাম আমি,যুথি আর মামুন। আমাদের জন্য একটি ট্যাক্সি ক্যাব ঠিক করে নিজে সি.এন.জি করে রওনা দিলেন।
গন্তব্য আমাদের মোহাম্মদপুর, তাঁর বাসায়। বিশেষ আতিথেয়তায় তিঁনি আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন তার বাসায়। বয়সে অনেক অনেক সিনিয়র হবেন, তবুও মনে হচ্ছিল আমাদের অন্তরংগ বন্ধুর মত। রাস্তা জুড়ে মনে আরো অনেক জল্পনা-কল্পনা করছিলাম। অবশেষে উঁনার বাসায় পৌছলাম।
দীর্ঘ বছর প্রবাস জীবন অতিবাহিত করছেন। প্রায়ই দেশের টানে, দেশের মানুষের টানে জন্মভুমিতে ফিরে আসেন। এখনও তাই কানাডা ফিরে যাবার ডেইট পার হয়ে গেলেও দেশে রয়েছেন শুধু দেশের মানুষের টানেই। বাসায় থাকে তাঁর মা ও ভাবি। খুব অনাড়ম্বর জীবন-যাপন তাঁর। রাস্তা-ঘাটে দুঃখি-গরীব মানুষের জন্য যে নিঃশর্তে ক্রমাগত দান করতে থাকে তাঁর জীবন-যাপন অনাড়ম্বর হবে এটাই স্বাভাবিক। একসাথে বসলাম, বিভিন্ন কথা শেয়ার করলাম। সবচেয়ে অবাক হলাম যেকথা শেয়ার করার জন্য মানুষ খুজে পাচ্ছিলাম না মনে হলে আল্লাহ আমাদের নিজে তাঁর সন্ধান দিলেন। খুব প্রাঞ্জল একটা আলোচনা করলাম আমরা সবাই।
জোহরের নামাজ শেষে আবার একসাথে বসলাম ফ্লোরে এক মাদূরে। সোফা ছিল কিন্তু উনার ফেবারিট প্লেস ফ্লোর। আমার মনে হচ্ছিল রাজকীয় কোন স্থানে বসে আছি। আসলে মনের প্রাচুর্যর কাছে পার্থিব সবই যে হার মানায় সেটা খুব গভীরভাবে অনুভব করলাম।
দুপুরের খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিলেন তিঁনি। সব কিছু নিজ হাতে করলেন। আতিথেয়তায় যে তিঁনি অনন্য সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
একজন ড্রাগ এডিক্টেড মানুষের জীবনের মোড় কিভাবে ঘুরে যায় ল্যাপটপে বসে তিঁনি আমাদের সেটাই দেখাচ্ছিলেন। একবার ল্যাপটপে আরেকবার তাঁর দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম। এত সুন্দরভাবে হাস্যরসের মাধ্যমে প্রতিটা কথার জবাব অদ্ভুত লাগছিল। অনেক ঘটনা বললেন। একটি ঘটনা শুনাই...
জাহাঙ্গিরনগর ইউনিভার্সিটি একবার এক ছেলের সাথে কথা হচ্ছিল উঁনার। ছেলেটি নাস্তিক ছিল। তাই উনাকে প্রশ্ন করলেন “ আচ্ছা আল্লাহ দেখতে কেমন?” জবাবে তিনি হাসতে হাসতে বললেন “ ভাই তুমি বিয়ে করবানা আবার কনে কিরকম তা জানতে চাও কেন?” জবাবে ছেলেটি কিছুই বুঝলনা। পরে উনি ব্যাখ্যা করলেন “ তুমি তো আল্লাহ কে বিশ্বাস করনা তাইলে আবার জানতে চাও কেন যে আল্লাহ দেখতে কেমন” এই জবাবে ছেলেটি তাৎক্ষনিক জবাব দিল “ ধরেন আমি বিশ্বাস করি এবার বলেন আল্লাহ দেখতে কেমন?” না না ভাই, কোন ধরাধরিতে আমি নাই,যদি বিশ্বাস করেন তাইলে বলতে রাজি আছি।
এবার ছেলেটা বাধ্য হয়ে বলল “ হ্যা আমি বিশ্বাস করি যে আল্লাহ আছে” এই জবাবে খুশি হয়ে তিনি বললেন “ যিনি ক্ষুদ্র পিপড়া সৃষ্টি করেছেন, তিনি বৃহৎ হাতি সৃষ্টি করেছেন, আবার তিনিই তোমারে আর আমারে সৃষ্টি করেছেন, এখন তিনি দেখতে কেমন হবে সেটা বাড়ি বসে তুমি চিন্তা কর, উত্তর পেয়ে যাবা”…কি এন্সার!!!!
এটিএন বাংলায় অনেক পুর্বে থেকে তাঁর প্রোগ্রাম দেখে রীতিমত আমি তাঁর ভক্ত ছিলাম। তাঁর বাসায় তাঁর ল্যাপটপে বসে তাঁর জীবন ইতিহাসের কিছু অংশ দেখছিলাম এটা চিন্তা করেই খুব আজব লাগছিল।
কিভাবে যে ঘড়ির কাটা দ্রুত চলে যাচ্ছিল বুঝতেছিলামনা। আসরের নামাজের পর কিছু কাজের প্ল্যানের পর তাঁর বাসা থেকে বের হলাম। রাস্তায় কিছু দূরে ৩/৪ জন ছেলে আড্ডা দিচ্ছিল,কেউ মোবাইলে কথা বলছিল। অনেক দূর থেকে তাঁর সালাম শুনেই ছেলেগুলো দাঁড়িয়ে গেল। হাসিমুখে সালামের জবাব দিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করল। মুদি দোকানদার , সেলুনের লোক, আশেপাশের বাড়ির দারোয়ান, রিকসাওয়ালা, সি.এন.জিওয়ালা কেউ তার সালামের জবাব হাসিমুখ ছাড়া দেয়নি। রাস্তায় এক ফকিরের সাথে দেখা হয়। তাকে তিঁনি সালাম দিয়ে নতুন টাকার নোট দিলেন। বৃদ্ধ খুশি হয়ে হাত বাড়িয়ে তাকে দোয়া দিতে চাইল। কিন্তু উনি হাত নয় বৃদ্ধকে বুকে জড়িয়ে তার প্রতিউত্তর দিলেন। আমি দেখছিলাম, ভাবছিলাম...মনে হচ্ছিল রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাতের কিছু অংশ প্র্যাকটিক্যাল দেখছি যা এতদিন থিওরিতে পড়েছিলাম।
অবশেষে সি.এন.জি ঠিক করে ভাড়া মিটিয়ে আমাদের যাবার ব্যবস্থা করলেন। আসার সময় প্রতিটা মুহূর্ত তাকে নিয়ে চিন্তা করছিলাম। আমার ভাই কখনও কোথাও গেলে বেশিক্ষন থাকতে পারেনা আমাদের সাথে। সেদিন সে সারাদিন ছিল,একটুও বোরড হয়নি। বাস্তবিকই মনে হল এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান তাকে বলেছিলেন “ কত ডিগ্রিওয়ালা হুজুরদের এটিএন বাংলায় প্রোগ্রাম করতে দিলাম। তাদের কথা বার্তা এত টানেনি আপনি কি বলেন সবই তো মন ছুঁয়ে যায়” মানবতাবোধ কে যে ইসলামের মেইন পার্ট মনে করে ইসলামের দাওয়াহ দিচ্ছে তার কথা শুনলে যে কারো মন ছুঁয়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নাই।
সন্ধ্যার কিছু পর বাসায় ফিরলাম। মনে হল এতক্ষন কোন মোহের ভিতর ছিলাম। সম্বিত ফিরে পেলাম কিছুক্ষন পর। অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের সংস্পর্শে থেকেছি, অনেক ইসলামপন্থী মানুষকে কাছ থেকে দেখেছি, অনেক উচ্চবিত্ত পরিবারের সাথে মিশেছি, অনেক বন্ধুর সাথে সময় পার করেছি কিন্তু সম্বিত ফিরে আসার পর মনে হল,
এতক্ষন যাঁর সাথে ছিলাম তার জ্ঞানের প্রাচুর্য হাজার হাজার ডিগ্রিকেও হার মানায়...মানবতাবোধ যাঁর প্রকৃত ধর্ম তথাকথিত ইসলাম্পন্থীরা তার সামনে লজ্জা পাবে...সম্পদের প্রাচুর্য সত্ত্বেও অনাড়ম্বর জীবন যাপনে যে অভ্যস্ত এবং রাস্তার ফকিরদের বুকে জড়িয়ে ধরতে যে কুন্ঠাবোধ করেনা তাঁর সামনে অহংকারি উচ্চবিত্তদের প্রেস্টিজ চলে যাবে বৈকি!...আর বন্ধু? সমবয়সী অনেক ইন্টিমেইট বন্ধুর থেকেও তিনি হতে পারে যেকোন বয়সের,যেকারো প্রকৃত বন্ধু......

স্বপ্ন দেখব বলে দুচোখ পেতেছি...



সারকেডিয়ান রিদম আমার অনেক আগেই চেইঞ্জ হয়ে গিয়েছে। তাই রাত জাগা পাখির মত নিয়ত জেগে থাকা নিয়ত অভ্যাসে দাড়িয়েছে। আর রাত জেগে পড়ার সুবাদে এই অভ্যাস আরো বেশি পাকাপোক্ত হয়েছে।
রাতের দৃশ্য দেখছিলাম। কি যেন মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে যাচ্ছিলাম ক্রমাগত। জানালার ওপাশে ফ্লাইওভারে সোডিয়াম বাতির আলোতে সবকিছুকে আরো বেশি মায়াবী করে তুলছিল। মাঝে মাঝে দুই একটা গাড়ি যাচ্ছে,সাথে সাথে প্যা প্যা ধ্বনি...ফ্লাইওভারের অপর পাশেই পাঁচতলা একটি সাদা বাড়ি। সোডিয়াম বাতির আলোর প্রতিফলনে সাদা বাড়িকে ঠিক যেন আলিফ লায়লার কোন ভুতড়ে বাড়ি বলে মনে হচ্ছিল। জানালার ওপাশের দৃশ্যের একটি ফ্লোচার্ট করে ফেললাম। ফ্লোচার্ট হচ্ছেঃ আমার জানালা, বস্তি, ফ্লাইওভার,সাদা পাঁচতলা বাড়ি। অসীম আকাশে তখন নিকষ নীল অন্ধকারের প্রতিচ্ছায়া।
নতুন করে চিন্তা করতে হয়না, নিউরণে এক্সট্রা প্রেসার দিয়ে কিছু ভাবা লাগেনা...বস্তি থেকে ভেসে আসা অকথ্য ভাষায় গালাগালির আওয়াজ, কখনওবা চাপা কান্নার মৃদু করুণ সুর, কখনো পুরুষ কতৃক নারীকে প্রহারের প্রতিধ্বনি প্রকৃতিকে আনমোনা করে তোলে। আমিও প্রকৃতির সাথে বিষন্ন হয়ে যায়। নিউরনে ভাইব্রেশান হয় কিঞ্চিৎ......
সেদিন ক্যম্পাস থেকে ফেরার সময় টিকিট কেটে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এক বৃদ্ধ মহিলা কাছে এসে বলল, “ মা সকাল থেকে কিছু খাইনি কিছু টাকা দে আমারে”। পাশে এক ফ্রেন্ড ছিল। দুজন মিলে কিছু টাকা দিলাম। বৃদ্ধ মহিলা টাকা পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলল। জিজ্ঞাসা করলাম, “আপনার বাড়ি কোথায়?” রাস্তা-ঘাটই আমার বাড়ি, আমার যে কোন যাওয়ার জায়গা নেই! এই জবাবে খুব ধাক্কা খাইলাম। ততক্ষনে বাস চলে এসেছে। কিছুই করার নেই ,কঠিন এক বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে নিজের ঠিকানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
বস্তি থেকে এখন চরম আকারে গালিগালাজের শব্দ ভেসে আসছে। অকথ্য শব্দের প্রতধ্বনিতে প্রকৃতির নিরবতা খান খান করে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। আমি এই গভীর রাতে দুঃখ বিলাস করছি ,হয়তবা এই গভীর রাতেই ময়না নামের মেয়েটি রাত জেগে সেলাই করছে। খুব স্বপ্ন তার পড়ালেখা করার। কিন্তু দারিদ্র্যের নির্মম বাস্তবতা তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। হয়ত এই গভীর মায়াবী রাতে ময়না তার স্বপ্নের সমাধি দিয়ে আপন মনে সেলাই করছে। এভাবে হাজার রাত কেটে যায় হাজার স্বপ্নের সমাধির ফুল দিয়ে...নিউরনে আবারো ভাইব্রেশান হয়...খুব অসহায় লাগে নিজেকে।
রাস্তা দিয়ে সেদিন এক রিক্সার চাকার সাথে প্রাইভেট কারের ধাক্কা লাগে। রিক্সার চাকা সম্পূর্ন বেঁকে যায়। ঘটনার পর পরই দেখলাম গাড়ি থেকে নেমে আসলেন এক ভদ্র লোক। ভাবলাম নিশ্চয় সমবেদনা বা ক্ষতিপুরন দেবার জন্য ভদ্রলোক এগিয়ে আসছেন। পরের ঘটনায় খুব মর্মাহত হলাম। তথাকথিত ভদ্রলোকের দ্বিগুন বয়সী রিক্সাওয়ালাকে প্রচন্ড গালিগালাজ ও সাথে ক্রমাগত চড়-থাপ্পড় মারতে লাগলেন। “ এই বেটা তুই ঠিকমত রিক্সা চালাস না কেন, কত টাইম নষ্ট করছস আমার তুই জানস??” এসব বলেই রিক্সাওয়ালাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। চারপাশের লোকজন সব এই দৃশ্য উপভোগ করছিল। উহ! সেইসময় আমার যে কিরকম ফিলিংস হচ্ছিল ভাষায় বলার মত না। খুব বলতে চাইলাম সেই তথাকথিত ভদ্রলোককে “ জনাব আপনার টাইমের মূল্য আছে, তার কি নেই? তার বাড়িতে ছেলে-মেয়ে না খেয়ে বাবার জন্য অপেক্ষা করছে ,সেসবের কি কোনই মূল্য নেই? তার যে ক্ষতি হয়ে গেল এর জন্য তার পরিবারের কতটা সাফার করবে সেসব কি একবারও চিন্তা করেছেন? তার ছেলে-মেয়েরা হয়ত স্বপ্ন দেখচে আজ তার বাবা অনেক টাকা আয় করে তাদের জন্য কিছু কিনে আনবে। এই স্বপ্নের কি কোন দাম নেই?” কিন্তু আমি পারিনি বলতে, আমার এবিলিটি ছিলনা ওই জঘন্য পরিবেশে এসব কথা সেই তথাকথিত ভদ্রলোককে বলার। শুধু একরাশ দুঃখবোধ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
রাত যতই গভীর হচ্ছে মন ততই খারাপ হচ্ছে...যেখানে হাজার স্বপ্নের সমাধি হয় নির্দ্বিধায়, সেই সমাধির উপর দাঁড়িয়ে স্বপ্ন বিলাসীরা আনন্দ উৎসবে মেতে থাকে গর্বের সাথে...মৌসুমি ভোমিকের মত আমারও গাইতে ইচ্ছা করে

“কেন শুধু শুধু ছুটে চলা ,একে একে কথা বলা, নিজের জন্য বাঁচা নিজেকে নিয়ে,
যদি ভালবাসা নাই থাকে শুধু একা একা লাগে ,কোথায় শান্তি পাব,
বল কোথায় গিয়ে......!!
........................................................
.........................................................
আস্থা হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ তোমাদের কাছে এসে দুহাত পেতেছি
আমি দুচোখের গও ভরে শূণ্যতা দেখি শুধু রাত ঘুমে আমি আর স্বপ্ন দেখিনা,
তাই স্বপ্ন দেখব বলে আমি দুচোখ পেতেছি...
তাই তোমাদের কাছে এসে আমি দুহাত পেতেছি...”

রাত গভীর হচ্ছে। গভীর ও জটিল হচ্ছে আমার চিন্তা ভাবনা গুলোও... স্বপ্ন দেখতে আকুল এই দুচোখে আর ঘুম আসছেনা। দুচোখে শুধুই কৃতজ্ঞতার অশ্রু সেই মহান সত্তার নিকট বারবার বলছে পারবতো এই জীবনের শুকরিয়া আদায় করতে? যে জীবনে আশ্রয়হীনতার ঝুঁকি নেই, ঝুঁকি নেই দারিদ্র্যের কষাঘাতে স্বপ্নকে সমাধি দেবার,...

প্রকৃত সুখের সন্ধান..

মানব মনের প্রকৃতি বড়ই বিচিত্র। কিসে সে কষ্ট পায় কিসে সে সুখী হয় তা সে নিজেই জানেইনা। হয়ত বিচিত্র মনের বৈচিত্রতায় আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। রাতের আকাশের যে মোহনীয় চাঁদ দেখে মন আনন্দে উদ্বেলিত হয় সেই একই চাঁদ দেখে চোখের কোণে জমে দুঃখের অশ্রুবিন্দু। সমুদ্রের বিশালতা কখনও এনে দেয় অসীম শূণ্যতা কখনওবা পূর্ণতা। বহুরূপী মনের এই সত্তা তাই বিশ্লেষণ করা খুব সহজ না।
কতটা অভিজ্ঞতা অর্জন করলে একজন নিজেকে পরিপূর্ণ ভাবতে পারে? হঠাৎ এই প্রশ্নে চিন্তার জগতে ছেদ ধরল। আসলেই কি মানুষ কখনও পরিপূর্ণ হতে পারে? খুব চিরন্তন ও আদি প্রশ্ন। অভিজ্ঞতা অর্জনের মাপকাঠি নাকি বয়স! কিন্তু বয়সই কি সবসময় সেই মাপকাঠি হতে পারে?
আট/দশ বছরের কোন ছেলের অভিজ্ঞতার পরিসীমা কতটুকু? সাথে সাথে একটি চিত্র মনের পর্দায় ভেসে আসল । সকালে ঘুম থেকে উঠেই কিভাবে স্কুল ফাঁকি দেওয়া যায়, কিভাবে আজ বিকালে ক্রিকেট খেলায় জেতা যায় কিংবা বাবাকে যে নতুন গাড়ি,ক্যাটবেরি কিনতে বলা হয়েছে তা আনতে ভুলে যাবেনাতো! মাকে কিভাবে কনভিন্স করে কম্পিউটারে “মোস্ট ওয়ান্টেড’’ গেইমস খেলা যায়...এইরকম হাজারো চিন্তায় ছেলেটির মন বিভোর থাকে। একই বয়সের যে ছেলে গাড়িতে হেল্পার এর কাজ করে তার চিন্তা জুড়ে থাকে কিভাবে যাত্রী বেশি উঠানো যায়, কিভাবে বেশি টাকা আয় করে পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেওয়া যায়। সারাদিন কাজের ফাঁকে হয়ত সে চিন্তা করে তার মা চুলার পাশে বসে আছে এই অপেক্ষায় যে তার ছেলে কখন বাজার নিয়ে আসবে! আরো যে ছোট ভাই-বোন আছে তারাও সারাদিন বড় ভাইয়ের অপেক্ষায় থাকে। স্কুল ফাঁকি দেওয়া দূরে থাক পড়াশুনার চিন্তায় সেখানে বিলাসিতা মাত্র। চিন্তার এই অভিজ্ঞতা তার বয়সকেও হার মানিয়েছে। হয়ত অস্বাভাবিক কিন্তু বাস্তব...
এই অভিজ্ঞতা যেহেতু আমাদের নাই তাই এগুলো দেখতে দেখতেই আমরা অভিজ্ঞ। চারপাশে এত্ত অস্বাভাবিকতার ছড়াছড়ি মাঝে মাঝেই স্বাভাবিক আর অস্বাভাবিকের মধ্যে পার্থক্য করা দুরূহ হয়ে পড়ে।
সুখের সন্ধানে আজ মানুষ দিশেহারা। সুখের আসল সংজ্ঞা কেঊ দিতে পারেনি।কিন্তু আইন্সটাইন সেই অসাধ্য সাধন করে গেছে। পৃথিবীতে সব কিছুই আপেক্ষিক, কোন কিছুই পরম নয়। আমার কাছে যা সুখ অন্যের কাছে তা অসুখ। কিন্তু তারপরও সুখের সংজ্ঞা মিললেও সুখ খুজে পাচ্ছেনা মানুষ। সমাজের একটা পার্ট বাদ দিয়ে সুখের অন্বেষণ যেন ট্রেডিশানে পরিণত হয়েছে। শরীরের একটা অংশ প্যারালাইসিস হলে হয়ত তার ব্যথা অনুভব করা যায়না কিন্তু সেই অঙ্গের অনুপস্থিতি ঠিকই অনুভুত হয়।
অপূর্ণ শরীর হাজার চেষ্টা করলেও পূর্ণ হতে পারবেনা যতক্ষন না ওই অংশ ঠিক হয়। এসব কথা ভাবতেই পরিচিত একজনের কথা মনে পড়ল। সে বছরে অকেশনালি একবার এতিমখানায়, মসজিদে টাকা দান করে আত্বতৃপ্তি অনুভব করে। মনে করে ইসলামের বড় একজন খাদেম...সবকিছুই ঠিক ছিল কিন্তু যদি সে ব্যাপারটা ট্রেডিশনালি না নিত , যদি মনে করত তার উপার্জনের টাকায় গরীবেরও হক আছে তাহলে হয়তবা সে এরকম অকেশনাল ইসলামের সেবা করে আত্বতৃপ্তি পেতনা। পহেলা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস/বিজয় দিবস উদযাপন সবই আজ নিছক ট্রেডিশান। একারনেই যারা পহেলা বৈশাখে লাল-সাদা শাড়ি পরে পুরো বাঙ্গালিয়ানা সাজে তারাই আবার থার্টি ফার্স্ট নাইটে ওয়েস্টার্ন কালচার খুব গর্বের সাথে পালন করে। নারী দিবসে নারী অধিকারের দাবি যাদের মুখে সোচ্চার হয় তাদের বিরুদ্ধে পত্রিকার পাতায় নারী নির্যাতনের অভিযোগে নিউজ আসে। খুব বিচিত্রভাবেই ট্রেডিশানের এই সিলসিলা প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ বিদ্যমান।
মানব মনের প্রকৃতি অনুসন্ধান করে চলছিলাম। অভিজ্ঞতা অর্জন নাকি এই রিসার্চে ওনেক হেল্পফুল হবে। সব কিছু প্র্যাকটিক্যালি অভিজ্ঞতা অর্জন যেহেতু সম্ভব না তাই দেখে দেখে অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। প্রকৃতি কখনও মনকে শূন্য থাকতে দেয়না। সুখের জন্য আকুল মন যে অংশ ডিলিট করে সেই অংশটি মন আরেকটি অংশ দিয়ে রিফিল করে। অটোমেটিক প্রোসেস। যে সত্তা মনকে একটিভলি লিড দিবে সে আজ প্যাসিভ। এই জন্যই হয়তবা যা কিছু করছি সব ট্রেডিশান, সব শুণ্য মনকে রিফিল করার চেষ্টা মাত্র। প্রকৃত সুখ পাবার প্রোসেসকে ইগ্নোর করে, সমাজের একটা পার্টকে বঞ্চিত করে সব কিছু ট্রেডিশনালি করে সবাই আমরা কৃত্তিম সুখের নিদ্রায় বিভোর । জানিনা এই নিদ্রার প্রহর কখন শেষ হবে...জানিনা দেখে দেখে অভিজ্ঞতা অর্জনের দিন কবে শেষ হবে...জানিনা ট্রেডিশনাল সুখের কালচার কবে সমাপ্তি হবে...

সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০১০

সমালোচনার জারন-বিজারন...

"যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা ও চিকিৎসক সমাজ "- এক সেমিনারে বসে ছিলাম। খুব অস্বস্তিকর পরিবেশ। মাত্র কমিউনিটি মেডিসিন তিনটা আইটেম দিয়ে আসার পর এই সেমিনারে বাধ্যতামূলক এটেন্ড করা যেন পুরাই শাস্তি মনে হচ্ছে। তারপরও স্পিচ শুনছি। মাঝে মাঝে বোরড হয়ে গেলে পুরা লেকচার গ্যালারির কয়টা লাইট, ফ্যান, এসি আছে সেটা গুনছি। একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর তার মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা বলছিলেন, ডায়াসের মাঝখানে বসা প্রিন্সিপাল স্যার কে দেখে কিছু ঘটনা মনে পড়ল। মেডিকেল লাইফে তিনটা ঘটনা আমার জন্য খুব উল্লেখযোগ্য...

প্রথম ঘটনাঃ ময়মনসিং মেডিকেল কলেজে প্রথম দিন ফিজিওলোজি লেকচার ক্লাসে দুই মিনিট দেরি হবার জন্য ঢুকতে না দেওয়া। আরে বাবা! প্রথম দিন, দুই মিনিট দেরি হতেই পারে! তারপরও দেরি হবার কারণ ছিল লেকচার হল চিনতে না পারা...

২য় ঘটনাঃ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এম্ব্রায়োলোজি ক্লাসের ২য় দিন। অদ্ভুত সুন্দরভাবে স্যার লেকচার দিচ্ছে। ইনফ্যাক্ট স্যারের প্রেসেন্টেশান, বোঝানোর ক্যাপাসিটি আমাকে এত মুগ্ধ করেছিল যে এম্ব্রায়োলোজির ফ্যান হয়ে গিয়েছিলাম আমি তখন। ৩য়দিন কলেজে গিয়ে শুনলাম স্যার ঢাকা মেডিকেলে পোস্টিং হয়ে চলে গেছেন। খুব শকড হলাম...

৩য় ঘটনাঃ সরকারী মেডিকেলে প্রিন্সিপাল বারবার চেইঞ্জ হবে এটাই স্বাভাবিক। এই পর্যন্ত আমাদের মেডিকেলে ৩য়বারের মত প্রিন্সিপাল চেইঞ্জ হল। কিন্তু মর্মাহত হলাম এই কারণে যে পূর্বের প্রিন্সিপাল ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ। খুব অমায়িক ব্যবহার উনার। সার্জারীর হেড ছিলেন। স্যারের প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ছিল কিন্তু কোন ভয় ছিলনা। সেই স্যারের রিপ্লেসমেন্টে বর্তমান তুখোড় রাজনীতিবিদ অল্পবয়স্ক স্যারকে দেখে আবারো শকড...

সেমিনার অবশেষে শেষ হল। খুব বেশি খারাপ লাগেনাই স্পিচ। একটু ব্যত্ক্রমধর্মী বক্তব্য শুনলাম এবার.." বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে বিজয় লাভের পর সামনে এগোতে পারেনি শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীর কারণে। তাই তাদের বিচার না করে একজন সাধারণ চোরের বিচার করা নৈতিকতা বিরোধী...”
বুঝলাম সরকার কেন বর্তমান ছাত্রলীগের দ্বারা তৈরি সন্ত্রাসী কাজের বিচার কেন করছেনা। ভাল লাগল যে সরকারী এটলিস্ট নৈতিকতা বিরোধী কোন কাজ করছেনা।

ক্লাস সেভেন/ এইট পর্যন্ত মারাত্বকভাবে হুমায়ুন আহমেদ ও জাফর ইকবালের ভক্ত ছিলাম। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে যখন সুনীল, সমরেশ, শীর্ষেন্দুর বই পড়া শুরু করলাম তখন নেশা কেটে যেতে লাগল। সম্ভবত বয়সের কারণে এই চেইঞ্জ এসেছিল। ্কিছুদিন আগে আনিসুল হকের বই পড়ার সুযোগ আসল ফ্রেন্ডদের মাধ্যমে। ‘ ফিরে এসো সুন্দরীতমা’ , ‘পাই বা নাহি পাই’, ‘মায়া’...৩টা বই পড়ে আমার অবস্থা খুব খারাপ। খাবারের শেষে যখন বিস্বাদ কোন কিছু খেলে পুনরায় টেস্টি কিছু খেয়ে রুচি ফেরত আনতে আমার অবস্থা সেরকম হল। হলে তখন হুমায়ুন আহমেদের ‘ কহেন কবি কালিদাস’ ও জাফর ইকবালের ‘ রবো নিশি’ বইটি ছিল। সেই বই ২টা পড়ে মানসিক অবস্থা সুস্থ করলাম। আর মনে মনে দুই ভাইকে হাজার স্যালুট জানালাম। তারা যাই লিখুক এটলিস্ট তাদের বই পড়ে মানসিক অবস্থা এত খারাপ হয়নি।

'মনপুরা' সিনেমা নিয়ে মাঝখানে খুব তোল্পাড়। এদিকে পেপার, ব্লগ থেকে আমি এত কিছু পড়লাম 'মনপুরা' নিয়ে যে আমার তখন সিনেমা দেখার আগ্রহ পুরাই শেষ। কোন উপন্যাস পড়ার আগে কেউ যদি আমাকে কাহিনী বলে দেয় তাহলে সেই উপন্যাস পড়ার বিন্দুমাত্র আগ্রহ থাকেনা আমার। সিনেমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম না। থ্রি ইডিয়টস যখন দেখলাম ঠিক তার এক সপ্তাহ পর দেখি পুরা ব্লগে, পেপারে এটা নিয়ে তোল্পাড় শুরু হয়েছে। এমনকি মেডিসিন ওয়ার্ডে একদিন স্যার আমাদের এই সিনেমাটা দেখার কথা বললেন। কি অবস্থা!! আমার কাজিনকে ধন্যবাদ জানালাম থ্রি ইডিয়টস তার ল্যাপটপে দেখানোর জন্য। এক সপ্তাহ দেরি হলেই সিনেমাটা আর আমার দেখা হতনা।
সর্বশেষ থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার... এটা নিয়ে চরম সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল পুরা ইন্টারনেট। এজ ইউজুয়াল সিনেমার কাহিনী ও সমালোচনা পড়তে পড়তে আমি টায়ার্ড। সেদিন এটা নিয়ে ফ্রেন্ড সার্কেলে এক বিতর্ক হয়ে গেল। হুম...সিনেমার এন্ডিং আমার একদম পছন্দ হয়নি। কিন্তু ওভারল সিনেমাটা খারাপ লাগে নাই। বর্তমান সমাজে মেয়েদের এরকম চিত্র যে খুব আনকমন তা কিন্তু না। ফারুকী তার চিন্তা থেকে এটা বানালো। সমালোচনাকারীদের সমালোচনা দেখে আমার মনে হল যে ফারুকীর এই সিনেমাটা আমাদের ভাল সমাজকে একদম নষ্ট করে দিল। নেগেটিভ বাস্তবতা আমরা দেখতে অভ্যস্ত নই। বা দেখলেও সেটা ইগ্নোর করাকেই শ্রেয় মনে করি। সিনেমাতে কোথাও দেখানো হয়নি যে তিশা খুব ভাল আছে। সে কারো কাছে মর্যাদা পায়নি, পায়নি নিরাপত্তার স্থান। এটা দেখেও কেন যুব সমাজ ইন্সপায়ার হবে খারাপ হবার জন্য আমি বুঝলামনা। এখন ফারুকী যদি বর্তমান ইভ টিসিইং নিয়ে কোন সিনেমা বানায় আমি শিউর সমালোচনাকারীরা তাদের সমালোচনার ঝড় তুলতে ভুলবেননা। সিনেমা যদি সমাজে দর্পন হয় তাহলে সেখানে নেগেটিভ বাস্তবতা তুলে আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বারবার আমরা সেই নেগেটিভ বাস্তবতাকে কিভাবে রিমুভ করা যায় সেটা না ভেবে বারবার কেন এই নেগেটিভ চিত্র চোখে তুলে দেখাইল সেটা নিয়ে ঝড় তুলি। তারপরও যারা থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারের বিরোধী তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই বিনীতভাবে......
আগেই বলে রাখি ফারুকীর ভক্ত আমি নই... যদি তার সিনেমা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ হয় তাহলে সমাজে ভালোর জন্য আপনারা কয়টা সিনেমা তৈরি করেছেন? যদি ওয়েস্টার্ন কালচারকে ফারুকী এদেশে এস্টাবলিশ করার জন্য তার মেধা,মননের বিকাশ ঘটিয়ে সিনেমা বানায় তাহলে আপনারা নৈতিকতাকে রক্ষা করার জন্য নিজেদের টাকা, সময়, মেধা ব্যয় করে কয়টা ভাল সিনেমা সমাজকে উপহার দিয়েছেন? যদি মনে করেন সিনেমা বানানো শুধুই সময় ও টাকার অপচয় তাহলে ফারুকীর সিনেমা নিয়ে এত তোল্পাড়ের কি আছে, আমাদের সমাজ যদি ভাল হয় তাহলে এই সিনেমা কাউকে কোন এফেক্ট করবেনা। আর যদিও করে এই শঙ্কা নিয়ে সমালোচনা করে কি লাভ? পারলে ফারুকীর সিনেমার জবাব নতুন কোন ভাল সিনেমা দিয়ে চ্যালেঞ্জ দেন...সমাজের কোন সেক্টর আজ ফাঁকা নেই। সব জায়গায় খারাপের সুদৃঢ় অবস্থান। তাদের বিরুদ্ধে শুধু সমালোচনা কেবল অরন্যে রোদন। সবাই এক্টিভিটি দেখতে চায়, সমালচনা শুনতে চায়না। ফারুকী যদি তার সিনেমা দিয়ে সমাজকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয় তাহলে শিউর থাকেন সেই অবক্ষয়কে আপনারা সমালোচনা দিয়ে শেষ রক্ষা করতে পারবেননা। তাই সমালোচনার আসন ছেড়ে ফিল্ডে আসুন, যদি আসলেই সমাজের প্রতি কোন দায়বোধ থাকে তাহলে সমালোচনা বাদ দিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করুন সুন্দর রুচিশীল কোন সিনেমা দিয়ে....