সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

টার্গেটঃ জয় ও সিওভাক্কোর থিসিস...... প্রেক্ষাপটঃ বাংলাদেশ......... মিশনঃ পসিবল/ইম্পসিবল???

১৯ নভেম্বর,২০০৮ এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমেরিকান পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার সহযোগী ইরাক,আফগানিস্তানে মার্কিন হামলা পরিকল্পনাকারী কার্ল সিওভাক্কো এক থিসিস প্রকাশ করে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত এই থিসিসে বলা হয় বাংলাদেশে ইসলামি সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা একটি মৌলবাদী বাহিনীতে পরিনত হচ্ছে।আরো বলা হয়, বাংলাদেশে বোরকা বিক্রি ৫০০ ভাগ বেড়েছে,মহিলারা বেশি বোরখা পরছে।সেনাবাহিনীতে ৩৫% মাদ্রাসার ছাত্র জয়েন করতেছে।এছাড়াও দেশে ইসলামীকরনকে প্রতিহত করতে পরিকল্পনার কথাও থিসিসে বলা হয়।

গত ২৯ শে ডিসেম্বর এর নির্বাচনে নির্বাচিত ডিজিটাল সরকারের মেইন টার্গেট এখন জয়ের থিসিসের সফল বাস্তবায়ন করা।স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও যে বাঙ্গালি অপূরনীয় স্বপ্নের চেইন রিএকশানে বার বার আবর্তিত হচ্ছে তা বুঝি এবার শেষ হবে।বাংগালি জাতির স্বপ্ন পুরন হবে এবার জয়ের স্বপ্ন পুরনের মাধ্যমে।
মিশন অলরেডি শুরু হয়ে গেছে বিগত ৬ মাসে সরকারের কার্যকলাপের মাধ্যমে।যেমনঃ
১।অনিশ্চিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ইস্যুতে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে টার্গেট করা এবং ইসলামকে প্রতিহত করার চেষ্টা।
২। ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী বিডি আর বিদ্রোহের নামে সেনাবাহিনীকে ধংস করে দেয়া।
৩।৩ জুলাই পিরোজপুরের তিন পর্দানশীন নারীকে জেএমবি সন্দেহে অহেতুক হয়রানি,বখাটেদের প্রতি সরকারের নমনীয় আচরন।
৪।অপেক্ষায় আছে কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের বাস্তবায়ন।
৫।এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ে ইসলাম বিরোধী বক্তব্য উল্লেখযোগ্য।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে মুসলিমদের পতনের জন্য কোন খ্রিস্টান,ইহুদি বা অন্য কেউ দায়ী ছিলনা। স্বয়ং মুসলিমদের প্রতারনার জন্য আজ আমাদের এই পরিনতি।ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে স্পেনে মুসলিম জাতি ৭০০ বছর শাসন করেছিল সেই স্পেন ধংসের জন্য দায়ী কতিপয় মুসলিম জাতির সীমাহীন গাদ্দারি।এক্ষেত্রে অবশ্য ইসলামের শত্রুরা মুসলিমদের টুল হিসেবে ইউজ করেছে।এখনও তার ব্যতিক্রম নয়।ধর্ম শিক্ষা উঠিয়ে দিয়ে কুদরাতি-খুদা শিক্ষা নীতি প্রনয়নের চেষ্টা,মাদ্রাসাকে জঙ্গি প্রোডাকশনের সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করা,সম্প্রতি পিরোজপুরে ঘটিত হিজাবের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের ক্যাডার দিয়ে হিজাবকে জেএমবি র ইস্যু ত্তৈরি করা এবং সরকারের সমর্থন সবকিছুই যেন জয়ের থিসিসের মিশনকে পসিবল করে তুলতেছে।

আমি খুব স্পষ্টতঃ আশঙ্কা করছি সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন এই জয়ের থিসিসের হাত ধরে বাংলাদেশ পরিনত হবে ইরাক অথবা আফগানিস্তান।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় জঙ্গিবাদ।পাশ্চাত্য মিডিয়াতে মুসলিমদের জঙ্গি,টেররিস্ট হিসাবে দেখানো হয়।অথচ সেই পাশ্চাত্য মিডিয়ার প্রতিফলন ঘটতেছে বাংলাদেশেও।এখানে কোন টিভি-চ্যানেলে ইসলামকে সুন্দরভাবে রিপ্রেসেন্ট করা হয়না।হিজাবকে ফোকাস করা হয় পাশ্চাত্য দৃষ্টিভঙ্গিতে।এমনকি সম্প্রতি হিজাব নিয়ে ঘটে যাওয়া তিন পর্দানশীন নারীকে বখাটে যুবকদের হয়রানিও ১/২ টি টিভি-চ্যানেল,পত্রিকা বাদে সর্বাধিক জনপ্রিয় পত্রিকার কোথাও এ নিয়ে সাধারন কোন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়না।অমিমাংসিত বিডি আর বিদ্রোহের নেপথ্যের কাহিণীকে সুকৌশলে ধামা চাপা দেয়া হচ্ছে।মনে হয় সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে জয়ের থিসিসের সফল বাস্তবায়ন।এই মিশন এখন কমপ্লিটলি পসিবল কিংবা ইম্পসিবল হবে কিনা তা নির্ভর করছে জনগনের হাতে।কারন সরকার যদি এই মিশনের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে তাহলে জনগনকেই আপারহ্যান্ড নিতে হবে।তা না হলে আমাদের এক ভয়ঙ্কর কঠিন ভবিষ্যতের সম্মুখিন হতে হবে।

জয় ও সিওভাক্কার মিশনের এই কাহিনী শুনে হয়ত আমেরিকান রাজপুত্র জয় ও তার ইহুদি স্ত্রী খুব খুশি হচ্ছেন।জয় তার এই অসাধারন থিসিসের জন্য স্পেশাল কোন এওয়ার্ডও পেয়ে যেতে পারেন পশ্চিমাদের নিকট।সেটাই স্বাভাবিক।যে কখনও দেশে বাস করেনি,দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ শেয়ার করেনি সে কিভাবে আমেরিকাতে থেকে এদেশের সমস্যা সমাধানের জন্য থিসিস করবে??? সে তো পাশ্চাত্যের এজেন্ট হিসাবে কাজ করবে সেটাই স্বাভাবিক।তাই নয় কি???

শেষে একটি কথা জয় সাহেবকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে বোরখার বিরুদ্ধে আপনার এই থিসিস ,আপনার জননী নির্বাচনে হিজাব পরে,ধার্মিক সেজে জনগনকে ধোকা বানানোর চেষ্টা কে আপনি কিভাবে দেখেন?আর আপনি কি মনে করেন যে ইসলামের আপনার এই অবস্থান এর পরিনাম কি হবে? ইতিহাস দেখেন, রিসার্চ করেন।জবাব পেয়ে যাবেন।আর একথাও জেনে রাখুন সত্য সংগ্রামের সৈনিকরা এখনও জীবিত আছেন।প্রয়োজনে বুকের তাজা খুন বিলিয়ে দিতে তারা কার্পন্য করবেনা।

বাঙ্গালি জাতি এখন এমনই এক ক্রান্তি লগ্নে অবস্থান করছে যখন ভবিষ্যত নির্ভর করতেছে জনগনের হাতে।তারা এখনও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর থাকবে নাকি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামগ্রীক জীবন রক্ষার তাগিদে সত্য সংগ্রামের সৈনিকদের পথের সহযোগী হবে, সেটার উপর নির্ভর করছে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বাধীন/পরাধীন ভবিষ্যত...




২টি মন্তব্য:

mahmud বলেছেন...

উরিব্বাপ্স।
একই দিনে ৩টা পোস্ট। মনে হচ্ছে যেন ঘুম ভেঙে উঠে বসেছেন অনেকদিন পর... নাকি অবসর পেলেন তীব্র পড়ালেখার চাপ থেকে।
যাহোক, লেখার বিষয়বস্তু আমাকে নতুন করে ভাবিয়ে তুললো...

রেইন স্পট বলেছেন...

ধন্যবাদ পড়ার জন্য।আসলে লেখাটা আগের বাট একদিনে আপলোড করেছি।আর পড়াশুনার চাপ সর্বদা বেশি। লেখা-লেখির জন্য আসলে কোন টাইম নাই।তারপরও কিছু কথা শেয়ার করার জন্য লিখি।ধন্যবাদ।