ঘটনার সূত্রে জানা যায় সম্প্রতি জার্মানির ড্রেসডেন শহরের একটি আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে, এক মুসলিম বিদ্বেষীর হাতে নিহত হন ৩২ বছর বয়স্ক এক মিশরীয় যুবতী শেরবিনি। মৃত্যুর সময় তিনি ৩ মাসের অন্ত:সত্বা ছিলেন এবং রেখে গেলেন ২ বছরের ছেলে মুস্তাফাকে।
১৮ বার ছুরিকাঘাতে শেরবিনিকে নৃশংসভাবে যে হত্যা করে, সে মামলার আসামী স্বয়ং অ্যাক্সেল। রাশিয়ান বংশোদ্ভূত এক জার্মান নাগরিক। ছয় বছর ধরে সে জার্মানিতে আছে। আদালত কক্ষে বিচারকদের সামনেই হত্যা করে শেরবিনিকে।এখানেই শেষ নয়। শেরবিনির স্বামী আলবি আলি ওকাজ স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁকেও ৩ বার ছুরিকাঘাত করে অ্যাক্সেল। তদুপরি ঘাতক মনে করে আলবির পায়েই ভুল করে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০০৮ সালে,যখন আক্সেল শেরবিনিকে সন্ত্রাসী,ইসলামপন্থী বলে টিজ করে।শুধু তাই নয়,শেরবিনির হিজাব খুলে ফেলার চেষ্টা করে।শেরবিনি আক্সেলের বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে।কিন্তু আক্সেলও ছাড়বার পাত্র নয়।তারই ফলশ্রুতুতে ১ লা জুলাই এই নৃশংস ঘটনার শিকার হতে হয় শেরবিনিকে।
ইতিহাস সাক্ষী,বিশ্বে কোন আদালতে শেরবিনির মত ঘটনার শিকার কেউ নেই।বিচারক,পুলিশের সামনে শেরবিনির এই মৃত্যু যেন সাক্ষী হয়ে গেল পশ্চিমাদের আসল চেহারার নগ্ন প্রতিচ্ছবি।কিন্তু মিডিয়া আজ এত নিরব কেন?মুসলিম দেশের কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিডিয়া সরব হয়ে যায়।ফলাও ভাবে প্রচার করা হয়।বছরের পর বছর টক অফ দা টাইমে থাকে মুসলিম বিদ্বেষী সংবাদ।ধিক্কার জানাই তোমাদের।ধিক্কার।
শেরবিনির কথা যখন লিখতেছি,তখন মনে পড়ে গেল পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার ন্যাক্কারজনক ঘটনার কথা।এই ঘটনা আর কোথাও নয়,বাংলাদেশের,আমার দেশের।যেখানে ৮০% এর বেশি মুসলমানের বসবাস।ঘটনা শুনলে মনে হবে না এটা আমার দেশের কোন ঘটনা।ফ্রান্স,ইউরোপ বা জার্মানি নয়।আমার দেশ,বাংলাদেশের ঘটনা।তিন জন বোরকা পরা নারীকে অপমানিত,লাঞ্চিত হতে হয় বখাটে যুবকদের নিকট।পরবর্তীতে জঙ্গি হিসাবে তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই বখাটেদের তথ্য অনুযায়ী।শুধু কি তাই? তাদের বোরকা খুলতে বাধ্য করে,যেটা মুসলিম মেয়ের সবচেয়ে বড় যে আইডেন্টিটি ।ছিঃ ছিঃ ভাবতেই কষ্ট লাগতেছে আমি বাংলাদেশের মেয়ে।সরকারের নিরব ভূমিকা যেন প্রকাশ করছে ইসলামবিদ্বেষি মনোভাব।কি অপরাধে জেলে গেল তারা? তাদের কে সার্চ করে তো কিছুই পাওয়া যায়নি।তাহলে কি সরকার বলতে চায় ইসলাম শুধুমাত্র জঙ্গিদের প্রতিনিধিত্ব করতেছে?নাকি সরকারি দলের ওই বখাটেদের বাচাতে সরকারের ইসলামের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান? মুসলিম প্রধান এই দেশের হাজার হাজার,লক্ষ লক্ষ মেয়ে হিজাব পরে।তাহলে তো বলতেই হয় এদেশে হাজার হাজার,লক্ষ লক্ষ জঙ্গি ঘুরে বেড়াচ্ছে।বখাটেদের বাচাতে ডিজিটাল সরকারের এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়!!!!!!!!চায়না এই ডিজিটাল প্রতিচ্ছিবি,যেখানে মুসলিম হয়ে,হিজাব পরিধান করাকে জঙ্গি আক্ষ্যায়িত করা হয়।আর চায়না,চায়না...
সারাবিশ্বে শেরবিনিকে নিয়ে উত্তাল।কিন্তু আমি আমার দেশের এই লজ্জাজনক ঘটনা কিভাবে প্রকাশ করব? নিজেক খুব ছোট মনে হচ্ছে।খুব ইচ্ছা করছে মারওয়া আল-শেরবিনির মত সাহসী হতে।সে মরনেও মনে হয় এক অনন্ত সুখ আছে...!!